রোববার (২ ফেব্রুয়ারী) টাঙ্গাইলের প্রথম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ মো. মাহমুদুল হাসান এ রায় দেন। দন্ডপ্রাপ্তরা হলেন-, মোহাম্মদ আলী ও কবির হোসেন। তারা দুজনেই জামিনে থেকে পলাতক রয়েছেন।
এছাড়া খালাসপ্রাপ্তরা হলেন- সাবেক এমপি আমানুর রহমান খান রানা, তার ভাই, টাঙ্গাইল পৌরসভার সাবেক মেয়র সহিদুর রহমান খান মুক্ত, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ নেতা সানিয়াত খান বাপ্পা ও ব্যবসায়ীক নেতা জাহিদুর রহমান খান কাকনসহ ১০ জনকে খালাস দেওয়া হয়েছে।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী টাঙ্গাইলের অতিরিক্ত সরকারি কৌঁশুলি মোহাম্মদ সাইদুর রহমান স্বপন বলেন, দুই জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ন্ড দিয়েছেন আদালত। সাবেক এমপি আমানুর রহমান খান রানাসহ ১০ জনকে বেকসুর খালাস পেয়েছেন।
আসামী পক্ষের আইনজীবী এডভোকেট নাসির উদ্দিন খান বলেন,আমরা আদালতের রায়ে সন্তুষ্ট। সত্যের জয় হয়েছে।
আসামী পক্ষের পরিবারের সদস্যরা বলেন,সত্যের জয় সব সময় হয়,আমরা দীর্ঘ ১৪ বছর এই মামলায় হয়রানির শিকার হয়েছি। আইনের প্রতি আমরা শ্রদ্ধা রেখেছিলাম সেইটার জয় হয়েছে।
২০১৩ সালের ১৮ জানুয়ারি জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা ফারুক আহমেদের গুলিবিদ্ধ মরদেহ তাঁর কলেজপাড়া এলাকার বাসার কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়। ঘটনার তিন দিন পর তাঁর স্ত্রী নাহার আহমেদ বাদী হয়ে টাঙ্গাইল সদর থানায় অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে হত্যা মামলা করেন। ২০১৪ সালের আগস্টে এই হত্যার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে আনিসুল ইসলাম রাজা ও মোহাম্মদ আলী নামক দুইজনকে গোয়েন্দা পুলিশ গ্রেফতার করে। তাঁরা আদালতে জবানবন্দি দেন। তাদের জবানবন্দিতে আওয়ামী দলীয় সাবেক সংসদ সদস্য আমানুর রহমান খান রানা, তার ভাই টাঙ্গাইল পৌরসভার তৎকালীন মেয়র সহিদুর রহমান খান মুক্তি, ব্যবসায়ী নেতা জাহিদুর রহমান খান কাকন ও কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি সানিয়াত খান বাপ্পার নাম বের হয়ে আসে। এ ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ওয়াহেদ, আবদুল খালেক ও সনি আদালতে জবানবন্দি দেন। এরপর চার ভাই আত্মগোপনে চলে যান। আমানুর রহমান খান রানা আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। তিন বছর হাজতে থাকার পর জামিন লাভ করেন। ৫ আগস্টের পর তিনি আবার আত্মগোপনে চলে যান। অপর দুই ভাই ২০১৪ সাল থেকে বিদেশে অবস্থান করছেন বলে তাদের ঘনিষ্ঠরা জানিয়েছেন। গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা গোলাম মাহফীজুর রহমান ২০১৬ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি চার ভাইসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন। ২০১৭ সালের ৬ সেপ্টেম্বর আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে এই মামলার বিচারকাজ শুরু হয়। বিচার চলাকালে দুই আসামি আনিছুর রহমান ওরফে রাজা ও মোহাম্মদ সমির কারাগারে মৃত্যুবরণ করেছেন। গত ২৬ জানুয়ারি ফারুক হত্যা মামলার যুক্তিতর্ক শেষ হয়।
Leave a Reply